ফের বাড়ছে করোনা সংক্রমনের হার। একারণে সরকারের পক্ষ থেকে সতর্কবার্তাও দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে দেশে করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট এক্সএফজি সংক্রমণের খবর জানিয়েছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিসিডিডিআর,বি)। এর পাশাপাশি এক্সএফসি ধরনটি শনাক্তের কথাও জানিয়েছেন আইসিডিডিআর,বির গবেষকরা। দুটোই করোনাভাইরাসের শক্তিশালী ধরন অমিক্রনের জেএন-১ ভ্যারিয়েন্টের উপধরন।
বাংলাদেশে নতুন ধরনের পাশাপাশি ভারতেও এনবি.১.৮.১ নামে একটি নতুন ধরনের বিস্তার দেখা যাচ্ছে। ডব্লিউএইচও বলছে, এনবি.১.৮.১ ধরন এখন ক্রমেই ছড়াচ্ছে। এর সংক্রমণের হারও বেশি। তবে করোনাভাইরাসের আগের ধরনগুলোর চেয়ে নতুন এই ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেশি নয় বলে ডব্লিউএইচও আশ্বস্ত করেছে। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।
নতুন ধরনগুলোর সংক্রমণের হার কতটা
নতুন ধরনগুলোর সংক্রমণের হার দেখে গবেষকরা কোভিড আবার তীব্র হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। গত কয়েক সপ্তাহে সিঙ্গাপুর ও হংকংয়ে ভালো সংখ্যক কোভিড রোগী শনাক্ত হয়েছে। ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে এনবি.১.৮.১, এলফ.৭ এর পর এক্সএফজির সংক্রমণ বাড়তে দেখা যাচ্ছে।
নতুন ধরন কতটা শক্তিশালী
প্রাথমিক তথ্য থেকে ধারণা করা হচ্ছে, নতুন ধরনগুলো আগের ধরনগুলোর চেয়ে বেশি সংক্রামক। এনবি.১.৮.১, এলফ.৭ এর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা দেখা যাচ্ছে। তবে এক্সএফজির বিষয়ে বিস্তারিত গবেষণা সবে শুরু হয়েছে। তবে নতুন ধরনগুলো পরিস্থিতি যে জটিল করে তুলতে যাচ্ছে, সে বিষয়ে মোটামুটি একমত গবেষকরা।
উপসর্গ
নতুন ধরনগুলোর ক্ষেত্রে আক্রান্ত রোগীদের স্বরভঙ্গ বা কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছেন গবেষকরা। আগে স্বাদ ও গন্ধ টের না পাওয়াটা ছিল প্রধান উপসর্গ। এবারের রোগীরা শুষ্ক বা অস্বস্তিকর কাশির সঙ্গে গলা ব্যথা এবং স্বরভঙ্গের কথা বলছেন। ভারতের বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসকরা স্বরভঙ্গের উপসর্গযুক্ত রোগী বেশি পাওয়ার কথা জানিয়েছেন। বর্ষা মৌসুমে ফ্লুর মতো শ্বাসযন্ত্রের অসুস্থতাও সাধারণ রোগ হয়ে দাঁড়ায় বলে কোভিড সংক্রমণকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করা কঠিন হয়ে পড়ে। চিকিৎসকরা স্বরভঙ্গ, ডায়রিয়া বা ক্লান্তি দেখা দিলে পরীক্ষার পরামর্শ দিয়েছেন।
কতটা উদ্বেগের
দেখা যাচ্ছে, রোগীর সংখ্যা বাড়লেও সংক্রমণই এখনও মৃদু থাকছে এবং হাসপাতালে আইসিইউতে ভর্তির সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়েনি। এটা ইঙ্গিত করে যে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের সংক্রমণ বাড়ছে, যার জন্য চিকিৎসার প্রয়োজন, কিন্তু নিবিড় পরিচর্যার প্রয়োজন নেই।
গবেষকরা বলছেন, সংক্রমণ বাড়লেই যে সবাই গুরুতর অসুস্থ হবে, তা মনে করার কারণ নেই। নতুন ধরনগুলো সহজে ছড়িয়ে পড়ছে ঠিক, তবে গুরুতর অসুস্থতা এখনও সৃষ্টি করছে না। তবে স্বাস্থ্য সমস্যাযুক্ত ব্যক্তি, বয়স্ক ও শিশুরা স্বাভাবিকভাবেই ঝুঁকিতে থাকে বলে তাদের বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন বিমেষজ্ঞরা।
টিকার কার্যকারিতা
গবেষকরা বলছেন, করোনার ওমিক্রন ধরন মোকাবেলায় যে টিকাগুলো রয়েছে, সেগুলো নতুন ধরন মোকাবেলায় কার্যকর হতে পারে। তাই চিকিৎসকরা সবাইকে টিকায় সুরক্ষিত করার ওপর জোর দিচ্ছেন।
করণীয়
আতঙ্কিত না হয়ে কোভিড বিধি মেনে চলার ওপর জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন জনসমাগস্থল এড়িয়ে চলতে, গেলেও মাস্ক ব্যবহার করতে। টিকা নেয়ার পাশাপাশি স্বরভঙ্গ, শুষ্ক কাশি, হালকা জ্বর, ডায়রিয়া বা গলায় অস্বস্তি হলে পরীক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
আমাদের ইউটিউব চ্যানেল